ভারতবাসীর জন্য এটা একটা গর্বের বিষয়। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের নামকরণ করা হল ভারতীয় ডঃ ইউসুফ হামিদের নামে।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নিউজ বুলেটিনে এখবর জানানো হয়। বলা হয়, কেমব্রিজের রসায়ন বিভাগ ২০৫০ সাল পর্যন্ত ‘ডঃ ইউসুফ হামিদ রসায়ন বিভাগ’ হিসাবে থাকবে। ডঃ ইউসুফ হামিদ হচ্ছেন কেমব্রিজের একজন প্রাক্তনী। তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি ভারতের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি সিপলার নির্বাহী চেয়ারম্যান। ২০১৯-২০২০এর রিপোর্ট অনুযায়ী যে কোম্পানির বার্ষিক ১৩৫৯৫কোটি টাকা টার্নওভার এবং ২৩০০ কোটি টাকা নেট লাভ হয়েছে।
ডঃহামিদ কেমব্রিজের রসায়ন বিভাগকে ঢেলে সাজানোর জন্য একটা বড় অনুদান উপহার দেন। যা বৃত্তি প্রদানের কাজে লাগানো হবে। তিনি এজন্যই এই বৃত্তি কর্মসূচিতে অংশ নেন যাতে কেমব্রিজের রসায়ন বিভাগটি শিক্ষাদান এবং গবেষণা উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় হতে পারে । এরপরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর নামে রসায়ন বিভাগের নামকরণ করে।
উপহারটি গ্রহণ করে কেমব্রিজের উপাচার্য অধ্যাপক স্টিফেন জে টোপ বলেন, ড :হামিদের এই উপহার রসায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বের উজ্জ্বল প্রতিভাদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি গবেষকদেরও এটা উৎসাহী করে তুলবে। তাঁর এই বৃত্তিমুখী অনুদানের ফলে যুক্তরাজ্যসহ গোটা বিশ্বের শিক্ষার্থী ও উঠতি গবেষকরা উপকৃত হবেন। সমৃদ্ধ হবে কেমব্রিজের রসায়ন বিভাগও।একই ভাবে ডঃ হামিদকে ধন্যবাদ জানান রসায়ন বিভাগের প্রধান ডঃ কামেস কিলারও। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হামিদের একটি উদ্ধৃতি সংযোজিত করেছে, তাতে হামিদ বলেন, ক্যামব্রিজ আমাকে রসায়ন বিদ্যার ভিত গড়ে দিয়েছে, কীভাবে আমাকে বাঁচতে হবে তাও শিখিয়েছে এবং দেখিয়েছে সমাজে কীভাবে অবদান রাখতে হবে। হামিদ বলেন, “আমি নিজে একজন বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র ছিলাম। কাজেই, ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীদের সহায়তা করতে পেরে আমি আনন্দিত।তিনি বলেন, কেমব্রিজের কাছে আমি ঋণী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট মতে, ডঃহামিদ বিগত ৬৬ বছর থেকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। খ্রিস্ট কলেজ, রসায়ন বিভাগ প্রভৃতির তিনি একজন উঁচু দরের হিতাকাঙ্ক্ষী।
ডঃহামিদ দেশ বিদেশে অনেক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।২০০৪ সালে পান খ্রিস্ট কলেজের সম্মানিত ফেলোশিপ, ২০০৫ সালে তাঁকে ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রির সম্মানিত ফেলোশিপ পান ২০১২ সালে, ২০১৪ সালে অর্জন করেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান সূচক ডক্টরেট ডিগ্রি। রয়েল সোসাইটির অনারারি ফেলো এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমির ফেলো নির্বাচিত হন ২০১২ সালে।আর বর্তমানে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তিসূচক অনুদান দিয়ে অর্জন করেন রসায়ন বিভাগকে নিজের নামের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার মতো বিরল সম্মান।